ভূমিকা
স্বাধীনতার অব্যবহিত আগে, অবিভক্ত বাংলায়, “তে-ভাগা সংগ্রাম” একটি ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ সংগ্রাম। ক্রমশ এই সংগ্রাম, উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণবঙ্গের প্রায় ১৯টি জেলায় ছড়িয়ে পড়ে এবং এক ব্যাপক গণ- সংগ্রামের রূপ নেয়। এই সংগ্রামের মেজাজও ছিল তীর ও দুর্বার- বিশেষ করে দিনাজপুর, রংপর ও জলপাইগুড়িতে গণ-বিদ্রোহের আকার ধারণ করে। আদিবাসী, রাজবংশী ও মুসলিম ভাগচাষী, দরিদ্র কৃষক ও খেতমজুরদের মধ্য থেকে অনেকে শহীদের মৃত্যুবরণ করেন—পুলিস ও জোতদারদের গুলিতে। কমরেড জয়ন্ত ভট্টাচার্য অনেক পরিশ্রম করে —সেই সময়কার পত্র-পত্রিকা, পুস্তিকা এবং পরবর্তীকালের স্মৃতিচারণা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে “তেভাগা সংগ্রামের” উপর একখানি বই লিখে- ছেন। এক জায়গায়, এত তথ্য একত্রে সংগৃহীত হওয়ায়—কৃষকসভার কর্মী এবং কৃষক সংগ্রামের প্রতি অনুরাগী পাঠকদের খুবই সাহায্য হবে। এমনকি যদি ভবিষ্যতে এই নিয়ে কেউ আরো গভীরভাবে গবেষণা করতে চান—তাঁদের পক্ষেও সংবিধা হবে।
কৃষক সংগ্রামের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়—এক এক পর্বে এক একটি সমস্যা—আশ, জলন্ত সমস্যা রূপে দেখা দেয় ৷ সেই পর্বে, সেই জলন্ত সমস্যা নিয়েই ব্যাপক ও তীব্র সংগ্রাম গড়ে ওঠে। ১৭৯৩ সালের “চিরস্হায়ী বন্দোবস্ত” চাল, হওয়ার পর, খাজনা ও আবোয়াব আদায়ের জ্বলে,মই ছিল বড় সমস্যা। তাই ১৭৯৩ সাল থেকে ১৮৫৯ খাজনা আইন পাস হওয়া পর্যন্ত, কালপর্বে—এই সমস্যাকে কেন্দ্র করে বার বার কৃষক বিদ্রোহ হয়েছে এর পরবর্তী কাল পর্বে (১৮৫৯-১৮৮৫) জমির স্বত্ত প্রজার অধিকারই জলন্ত সমস্যা হয়ে দেখা দেয়। ১৮৮৫ সালের প্রজাস্বত্ত আইনের মাধ্যমে তার সমাধানের চেষ্টা হয়। ১৮৭০-এর পর থেকেই পর পর ক্রমাগত দূর্ভিক্ষের ফলে একদিকে কৃষকরা জমি হারাতে থাকে এবং অন্যদিকে জোতদারশ্রেণীর উদ্ভব হতে থাকে। এই প্রক্রিয়া ১৯২৯-১৯৩৩ সালের ধনতান্ত্রিক সঙ্কট-এর সময়ে এবং পরবর্তীকালে ১৩৫০ সালের (১৯৪৩) মন্বন্তরের সময়ে, তীব্র আকার ধারণ করে। এই পর্বে ১৯৩৭ সালে ফজলুল হক সাহেব অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী হন। তিনি ঋণ সালিশী বোর্ড স্হাপন করে এবং চক্রবৃদ্ধি হারে সূদ তুলে দিয়ে কৃষকদের কিছুটা দুর্ভোগ দূর করবার চেষ্টা করেন এবং স্যার ফ্রান্সিস ফ্লাউড সাহেবের নেতৃত্বে “ফ্লাউড কমিশন” গঠন করেন। এই ফ্লাউড কমিশনই বর্গাদারদের তিন ভাগের দু’ভাগ দেওয়ার সাপারিশ করেন। কিন্তু ১৯৩৯ সালের…
বাংলার ‘তেভাগা’ তেভাগার সংগ্রাম
জয়ন্ত ভট্টাচার্য
ন্যাশনাল বুক এজেন্সি
প্রথম প্রকাশ জুলাই ১৯৯৬
প্রকাশক : সলিল কুমার গাঙ্গুলি
ন্যাশনাল বুক এজেন্সি প্রাইভেট লিমিটেড
১২ বঙ্কিম চাটার্জি স্ট্রীট, কলকাতা ৭00 0৭७
মুদ্রক : সমীর দাশগুপ্ত
গণশক্তি প্রিন্টার্স প্রাইভেট লিমিটেড
৩৩ আলীমদ্দিন স্ট্রীট
গ্রন্থনা : সরস্বতী বাইন্ডিং ওয়ার্কস, কলকাতা ৭০০ ০০৯
প্রচ্ছদ : শ্রীগণেশ বস
দাম : চল্লিশ টাকা
‘Banglar Tebhaga’ Tebhaga Sangram
-Jayanta Bhattacharyya
Reviews
There are no reviews yet.