এই বইখানা যে সত্যই একদিন প্রকাশিত হবে, নানা ঘটনা বিপর্যয়ে, সেই আশা আমার মন থেকে অনেকটা লুপ্তই হয়ে গিয়েছিল । তবু ১৯৬৭-র অক্টোবরে কয়েকজন শুভানুধ্যায়ীর অক্লান্ত প্রচেষ্টা ও ঐকান্তিক আগ্রহে বইখানা যখন প্রকাশিত হল, তখন চৌদ্দহাত দেয়াল-ঘেরা স্বজন-বিচ্ছিন্ন প্রকোষ্ঠে বসে আমি সেই আনন্দ সংবাদ গ্রহণ করেছিলাম। বইটি প্রকাশের ব্যাপারে আমার প্রত্যক্ষ সহায়তা ও পরামর্শের যেই প্রয়োজন অনিবার্য ছিল, তা সম্ভব না হওয়ায় তার মধ্যে কিছু কিছু ত্রুটি থেকে যায় । তবুও দেশের ছাত্র ও তরুণ সমাজ এবং সাধারণ- ভাবে অন্যান্য পাঠক-পাঠিকারা যেই আন্তরিকতার সঙ্গে বইখানা গ্রহণ করেছেন, সেজন্য আমি কৃতার্থ । আমাদের দেশের মুক্তি, গণতন্ত্র ও শান্তির অকুতোভয় যোদ্ধাদের হাতে আত্মত্যাগের গৌরবময় অতীত ঐতিহ্যকে তুলে ধরার জন্যই এই ইতিহাস রচনার তাগিদ আমি অনুভব করেছিলাম ৷
১৯৪৮-৫৬ পর্যন্ত বিনা বিচারে আটক থাকার পরে ১৯৫৬-৫৮ পর্যন্ত দুই বছর কিছুটা নির্বিঘ্ন জীবন যাপনের সুযোগ পাই। তখন দেশের বিভিন্ন গণতন্ত্রমনা দলগুলি নিয়ে যেই মিলিত মন্ত্রীসভা গঠিত হয়, তার ফলে প্রাদেশিক নিরাপত্তা আইন বাতিল এবং প্রায় সর্বসম্মতিক্রমে চট্টগ্রাম বিপ্লবী শহীদদের জন্য আমার উত্থাপিত ‘জালালাবাদ স্মৃতি সৌধ’ নির্মাণের বেসরকারী প্রস্তাব গ্রহণ–এই দু’টি বিশেষ উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্ত হয় ৷ পরিষদ কক্ষে ঐ প্রস্তাব উত্থাপন উপলক্ষে আমার সুদীর্ঘ বক্তৃতার পরই, অনেকেই চট্টগ্রামের সেই বীরত্বপূর্ণ অধ্যায়ের বিস্তৃত কাহিনী রচনার জন্য আমাকে অনুরোধ করেন ৷
এই কাহিনী রচনা করতে গিয়ে কেন আমি শুধুমাত্র চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার দখল এবং সেই গৌরবময় সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত দেশভক্ত বিপ্লবীদের বিষয় না লিখে, ১৮৫৭—১৯৪৭-এর আজাদীর পূর্ব পর্যন্ত সাম্রাজ্যবাদী পরাধীনতা থেকে মুক্তির সংগ্রামে জাতিধর্ম ও রাজনৈতিক দলমত নির্বিশেষে যথাসম্ভব সকল দেশপ্রেমিকের অবদানের কথা রচনার সিদ্ধান্ত করি, সেই বিষয়ে আগেই বলেছি।
স্বাধীনতা সংগ্রামে চট্টগ্রাম
পূর্ণেন্দু দস্তিদার
বইঘৱ ৷৷ চট্টগ্রাম
প্রথম সংস্করণ : শ্রাবণ ১৩৭৪
দ্বিতীয় সংস্করণ: আষাঢ় ১৩৭৬
তৃতীয় মুদ্রণ : আশ্বিন ১৩৯৭
প্রকাশনায় : বইঘর
২৮৬, বিপণি বিতান, চট্টগ্রাম
মুদ্রণে : দি আর্ট প্রেস
৮, কবি নজরুল ইসলাম সড়ক চট্টগ্রাম
দাম : একশত চল্লিশ টাকা
Reviews
There are no reviews yet.