বিপ্লবের পরিকল্পনা
১৯১৫ খ্রীষ্টাব্দের ১২ই ফেব্রুয়ারী। লাহোরের বিপ্লব কেন্দ্রে গোপন সভা বসেছে। সভায় উপস্থিত রয়েছেন বিপ্লবী নায়ক রাসবিহারী বসু, গণেশ পিংলে, ভাই পরমানন্দ, শচীন সান্যাল, হরদয়াল এবং আরও কয়েকজন প্রথম সারির বিপ্লবী নেতা। তাছাড়া কয়েকজন কর্মীও উপস্থিত রয়েছে সেখানে। তাদের মধ্যে একজনের নাম দীননাথ।
রাত তখন প্রায় বারোটা। সবাই উদ্গ্রীব হয়ে তাকিয়ে আছেন সর্বাধিনায়ক রাসবিহারীর মুখের দিকে।
ধীর-গম্ভীর কণ্ঠে রাসবিহারী বলতে শুরু করলেন : বন্ধুগণ! আজ আমি যে পরিকল্পনার কথা বলছি, সে পরিকল্পনা যদি সফল হয় তাহলে এই মাসের মধ্যেই আমরা আমাদের মাতৃভূমিকে স্বাধীন করতে পারবো । আপনারা হয়তো জানেন না যে, বিগত কয়েক মাস ধরে আমি এবং পিংলে সারা ভারতের বিভিন্ন সেনানিবাসে গিয়ে ভারতীয় সেনানায়কদের সঙ্গে বিপ্লব শুরু করা সম্বন্ধে আলোচনা করেছি। সেনানায়করা আমাদের কথা দিয়েছেন যে, আমার কাছ থেকে নির্দেশ পেলেই তাঁরা বিদ্রোহ করবেন এবং প্রথমেই কামান ও গোলাবারুদ অধিকার করে নিয়ে তারপর ইংরেজ অফিসারদের বন্দী করে ফেলবেন। তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে আরও স্থির হয়েছে যে, আমাদের অর্থাৎ বিপ্লবীদের দ্বারাই এই বিদ্রোহ তথা বিপ্লব পরিচালিত হবে। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধে বিপ্লবী নায়কদের ভুলের জন্যেই সিপাহীদের পরাজয় বরণ করতে হয়েছিল । বিপ্লবী নায়করা যদি বিভিন্ন সৈন্যাবাসের সেনানায়ক ও সৈনিকদের সঙ্গে ঠিকভাবে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারতেন এবং সারা ভারতে যদি একই সময়ে বিদ্রোহ সংঘটিত হ’তো, তাহলে বিদ্রোহের ফলাফল অন্য রকম হ’তো ; অর্থাৎ আটান্ন বছর আগেই ভারতবর্ষ স্বাধীন হ’তো। কিন্তু সে- বারের বিদ্রোহের যাঁরা নেতা ছিলেন, তাঁদের মধ্যে কয়েকজন নেতার দেশাত্মবোধের অভাবের দরুন এবং বিশেষ করে যোগাযোগ-ব্যবস্থা ঠিকভাবে করতে না পারার দরুন সে বারের বিদ্রোহ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। কিন্তু এবার যাতে সে রকম ভুল না হয়, তার জন্যে আমি আগে থেকেই সারা ভারতের ভারতীয় সেনানায়কদের সঙ্গে পূর্বাহ্নে আলোচনা…
মহানায়ক রাসবিহারী
ইন্দুভূষণ দাস
প্রকাশক : শ্রীনির্মলকুমার সাহা
নির্মল বুক এজেন্সী
৮৯, মহাত্মা গান্ধী রোড কলিকাতা – ৭০০০০
প্রচ্ছদ : সত্য চক্রবর্তী
লেজার টাইপসেটিং পেজমেকার্স
২৩বি রাসবিহারী এভিনিউ কলিকাতা – ৭০০০26
মূল্য : ষোল টাকা
Reviews
There are no reviews yet.