সিম্ বিস্কে— অতিবাহিত হয় আমারও শৈশব আর কৈশোর। তারপর আমি লিখেছি ‘প্রথম বীরত্বের কাহিনী’, ‘মনোহর তারকা’, ‘তোমায় করি হৃদয় সমৰ্পণ’, ‘সবুজে দোলনা-খাটের কাছে’ নামক বইগুলো। তাতে বলা হয়েছে আমার সমসাময়িক এবং সমবয়সী লোকেরা কীভাবে বিপ্লবের পথ ধরেছিল, কীভাবে তারা লেনিনের আদর্শের প্রতি তাদের আনাগত্য বজায় রেখেছিল। আমার লেখা কাহিনীসমূহ প্রকাশিত হয়েছে একাধিক বার। ওগুলো সম্পর্কে আমি পেয়েছি পাঠকের শত শত চিঠি – প্রশংসাপূর্ণ চিঠি। একটি কাহিনী থিয়েটরে মঞ্চস্থ হয়েছে, বাকীগুলো বেতারে পড়ে শোনানো হয়েছে এবং ফিল্ম ক’রে টেলিভিশনে দেখানো হয়েছে। আমি এই সমস্তকিছ, স্মরণ করছি কেবল এটা বলার জন্য যে উক্ত বইগুলো – আমার অতি প্রিয় বইগুলো – প্রকৃত প্রসঙ্গে হাত দেওয়ার আগে আমার কাছে শধুমাত্র এক সচনাস্বর,পই ছিল।
আর প্রকৃত প্রসঙ্গটি ছিল— নির্ভীক, নিঃস্বার্থ এবং ভাবাদর্শের প্রতি অনুগত সংগ্রামী ও বিপ্লবীর নৈতিক চরিত্র। আমার কল্পনায় এই চরিত্রটি গড়ে উঠে বিপ্লবের আগনে ঝাঁপিয়ে-পড়া লোকেদের কথিত কাহিনী থেকে, পঠিত সংবাদপত্র আর বই থেকে, দেখা ফিল্ম থেকে। সে ছিল সত্যিই এক বিশাল প্রসঙ্গ। মহাফেজখানায় বসে নানা কাগজপত্র অধ্যয়নের পরই, হাজার হাজার পরনো ফাইল দেখার পরই কেবল আমি লেনিনের কথাগুলোর প্রকৃত অর্থ বুঝতে পারলাম : ‘আমরা দল বেধে হাত ধরাধরি ক’রে চলেছি অতি সংকীর্ণ ও কঠিন এক পথ ধরে। চারিদিক থেকে আমরা শত্রুর দ্বারা আবেষ্টিত, এবং প্রায় সর্বদাই আমাদের এগতে হচ্ছে তাদের গোলাগুলির মধ্য দিয়ে। আমরা স্বাধীনভাবে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুসারে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি কেবল শত্রুদের সঙ্গেই লড়ার উদ্দেশ্যে।’
বিপ্লবীদের চরিত্রে সবচেয়ে বিস্ময়কর যাকিছু, তা তাঁদের ব্যক্তিগত দঃখকষ্ট নয়, তাঁদের অদৃষ্টের বিড়ম্বনা নয়, – এসব ব্যাপার তাঁদের জারতন্ত্রের সঙ্গে, অধিকাংশের জন্য কায়েম-করা অধিকারহীনতার সঙ্গে, প্রকাশ্য দুর্নীতির সঙ্গে, একদিকে অফুরন্ত ভোগবিলাস এবং অন্যদিকে চরম দারিদ্র্যের সঙ্গে সংগ্রামে অনুপ্রাণিত করে নি। অনেক বিপ্লবীই মহাসম্মুখে জীবনযাপন করতে পারতেন। কিন্তু তাঁরা সংগ্রামে নেমেছিলেন, এবং সে সংগ্রামে তাঁদের উদ্বুদ্ধ করেছিল জনগণের প্রতি সর্বপ্রকার অন্যায়-অবিচার। তাঁরা নিজের জন্য কিছ চান নি – না উচ্চ পদ, না পদবী, না সম্পত্তি; তাঁরা বরং তাঁদের যাকিছু, ছিল তার সবই – এমনকি নিজের এবং নিজের আত্মীয়স্বজন আর সবচেয়ে প্রিয় ব্যক্তিদের জীবন পর্যন্ত—উৎসর্গ করতে প্রস্তুত ছিলেন। তাঁরা জেলে গিয়েছিলেন, সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন, নির্বাসন দণ্ড ভোগ করেছিলেন; আর মরার প্রয়োজন হলে তাঁরা বীরোচিত মর্যাদার সঙ্গে হাসিম,খে মৃত্যুও বরণ করতে পারতেন। জারকে হত্যার প্রচেষ্টার অভিযোগে দণ্ডিত নিকোলাই কিবাল চিচ ফাঁশি…
প্রথম বীরত্বের কাহিনী
আর্সেনি রুতকো
প্রগতি প্রকাশন
মস্কো
মূল রুশ থেকে অনুবাদ : বিজয় পাল
А. Рутько
ПОВЕСТЬ О ПЕРВОМ ПОДВИГЕ
на языке бенгали
Rutko A.
THE TALE OF THEIR FIRST EXPLOIT
in Bengali
© বাংলা অনুবাদ : সচিত্র
70803-548
P -704-81
014(01)-82
প্রগতি প্রকাশন
১৯৮২
সোভিয়েত ইউনিয়নে মুদ্রিত
4803010
Reviews
There are no reviews yet.